যুথী
কান্না জড়িত
কন্ঠে ব্যাকুল
হয়ে বলেন,
জীবনই যেখানে
নেই, সেখানে আবার জীবনের
গল্প কিসের।
জীবন্ত লাশ হয়ে পড়ে
আছি রাণীগঞ্জের
যৌন পল্লীতে। এই পল্লীতে আসার পর বাবা,
মা হারিয়েছি।
ভাসমান থাকা অবস্থায়
ভালো ছিলাম,
দিনে বা
রাতে খদ্দেরের চাহিদা
মেটানোর পর অন্তত বাবা
মায়ের
মুখ দেখতে
পেতাম। নিজেকে পরিবার
ও সমাজ
থেকে বিচ্ছিন্ন
করে যাদের
কাছে এসেছি
তারাও সব সময় দর্ব্যবহার
করে।
সারা দিনে এক বেলা
খেলেও আগের
জীবনে সুখ
ও শান্তি দুটিই
ছিল। এখানে কোন
সুখ, শান্তি, স্বস্থির
কিছুই
নেই। নেই আগের মতো প্রাণবন্ত
জীবন।
এই অন্ধকার জীবনে
কেটে যাওয়া ৯ বছরে
যা হারিয়েছি
তা কোনদিন
ফিরে পাবার নয়।
যা রোজগার
করি তা থেকে অবশিষ্ট
কিছুই থাকে
না। জীবনেতো
শান্তিহীন ভাবেই কেটে গেলো। মরার
পরেও
শান্তি পাওয়ার
আশা নেই।
মারা যাওয়ার পর আমাদের
লাশ নিয়েও
ঝামেলার শেষ নেই। স্বাভাবিক ভাবে
মুসলিমদের জানাজা
ও দাফন
এবং সনাতন
ধর্মের বেলায়
শ^শানে
দাহ। কিন্তু আমাদের বেলায়
জুটে কেবল অবহেলা আর
অবজ্ঞা। মৃত্যুর লাশ
নিয়ে চলে
টানা-হেঁচড়া। স্থানীয় মসজিদের বা বাহিরের কোন মসজিদের
ইমাম সাহেবও
জানাজা পড়ায়না।
লাশ দাফন করার
অনুমতির জন্য দ্বারে
দ্বারে ঘুরতে
হয়। অবশেষে
বেওয়ারিশ লাশ
মাটিচাপা দেওয়া হয় অথবা নদীতে
ভাসিয়ে দেওয়া হয়। ১৭
বছর বয়সী
আরেক যৌনকর্মী
জেরিন (ছদ্ম
নাম) বলেন তার
বাবা মারা
গেছে। পরিবারের
উপর্জন করার মতো কেউ
নেই। তার
ছোট তিন
ভাই বোন
রয়েছে। সংসারের খরচ যোগাতে
চাকরি খুঁজতে
থাকি।
স্থায়ীভাবে লিঙ্গ বড় করার উপায় কি ?
এক
মহিলার সাথে সাক্ষাত
হয় ।
সে গার্মেন্টন্সে
চাকরি দিতে চাওয়ায় তার
সাথে রওনা
দেই। তারপর সে আমাকে এক
মধ্যবয়সী কাছে
দিয়ে বলে যে, সে তোমাকে
ঢাকায় গার্মেন্টসে
পৌঁছে দিবে।
সেই লোকটি আমাকে এখানে
নিয়ে আসে। এখানে অনেক লোকের সমাগম দেখে আমি বলি যে গার্মেন্টস
কই। তখন সর্দারনি
বলে এটাই তোমা জন্য
গার্মেন্টস। এখানে
তুই কাজ
করবি। তোকে দালালে আমার
কাছে
বিক্রি করে
দিছে। ঘরে
কাষ্টমার নিবি,
টাকা রোজগার করবি
আর সেই টাকা আমাকে
দিবি। এসব কথা শুনে
আমি
কান্নায় ভেঙে
পড়ি। আমি
কান্নাকাটি করায় আমাকে
দূরে এক
বাড়িতে নিয়ে
যায়। সেখানে
জোর করে
আমার সতিত্ব নষ্ট
করে। সপ্তাহ
খানেক আমাকে সেই বাড়ী থেকে
এই
পতিতালয়ে নিয়ে আসে।
রাত্রে আমাকে উলঙ্গ
করে ঘর
তালা দিয়ে
রাখে। সকাল
হলে ঘরের তালা
খুলে দিয়ে
সাজসজ্জা করিয়ে আমাকে
খদ্দেরের জন্য
অপেক্ষায় রাখে।
দীর্ঘ সময় সহবাস করার প্রাকৃতিক ঔষধের নাম কি ?
এরকম
যুথী-জেরিনের
মতো জামালপুর শহরে অবস্থিত রানীগঞ্জের
যৌনকর্মীদের কষ্টে ভরা
জীবনের গল্প
একই। রানীগঞ্জ
যৌনপল্লীর অভ্যন্তরে খোঁজ
নিতে যাই
। খদ্দেরের
অপেক্ষায় যৌনকর্মীরা
বসে আছেন
সস্তা বাহারী
মেকআপ মেখে।
বিট্রিশ
আমলে প্রায়
১৫০ বছর
আগে জামালপুর
শহরের প্রাণকেন্দ্রে
রানীগঞ্জ যৌনপল্লী
গড়ে উঠে।
এই যৌনপল্লীতে প্রায়
৫০০ যৌন
কর্মী বসবাস
করে। অর্থকষ্ট
চরম আকার ধারন করেছে রানীগঞ্জের
যৌনকর্মীদের। আলোর
পথ মিলবে কিনা তা কেউ বলতে
পারে না।
সুতরাং যৌনকর্মীদের স্বাভাবিক
জীবনে ফিরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্ট সকলকে উদ্যোগী হতে হবে। আজ এ পর্যন্তই। ধন্যবাদ।
পোস্ট ট্যাগ-