রোগা পাতলা শরীর কেউ পছন্দ করে না। নিজেকে আনফিট মনে
হয়। অন্যদিকে অতিরিক্ত মোটা হলেও নিজের কাছে অস্বস্তি লাগে ও বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত
হওয়ার ঝুকি বাড়ে। অনেকেই আছে যারা মোটা হওয়ার জন্য অনেক চেষ্টা করে থাকেন কিন্তু কিছুতেই
কিছু হচ্ছে না। বয়সের তুলনায় ওজন অতিরিক্ত কম হলে সেটি দুশ্চিন্তার কারন। আজ আমরা মোটা
হওয়ার সবচেয়ে সহজ উপায়গুলি নেয়ে আলোচনা করবো।
মোটা হওয়ার সহজ উপায়গুলো নিম্নরুপ -
১। ব্যায়াম করা
-
আপনি হয়তো ভাবতে পারেন যে, ওজন কমানোর জন্য ব্যায়াম
প্রয়োজন কিন্তু ওজন বৃদ্ধির জন্য নয়। তাহলে আপনার ধারনাটি ভূল। ওজন কমানোর জন্য যেমন
ব্যায়াম প্রয়োজন ঠিক তেমনি ওজন বাড়ানোর জন্যও ব্যায়াম প্রয়োজন। ব্যায়াম করার ফলে আপনার
শরীরের বিপাকীয় প্রক্রিয়া ভালোভাবে কাজ করবে । ফলে আপনি যে খাবার খাবেন তার থেকে প্রয়োজনীয়
উপাদানগুলি দেহ ভালোভাবে গ্রহন করবে। হজম প্রক্রিয়া উন্নত হলে ঘন ঘন খাবার গ্রহনের
চাহিদা তৈরী হবে।
২। বার বার খাবার
গ্রহণ -
প্রত্যেক মানুষেরই অল্প পরিমানে বার বার সুসম খাবার গ্রহণ
করা উচিৎ। ২ ঘন্টা পর পর অল্প করে খাবার খেতে হবে। তবে যারা ওজন বৃদ্ধি করতে চান তারা
প্রতি ২ ঘন্টা পর পর বেশি করে খাবার গ্রহন করবেন। দুধ, দই, ছানা, ডিম, ফলমূল ইত্যাদি
খাবার দিয়েই দৈনৈন্দিন খাবার চাহিদা পূরণ করতে পারেন। এতে আপনার শরীরের পুষ্টিহীনতা
দূর হওয়ার পাশাপাশি ওজন বৃদ্ধি পাবে। এটি সহজে মোটা হওয়ার কার্যকরী একটি উপায়।
৩। খাবারে রাখুন
কার্বোহাইড্রেড -
ওজন বাড়াতে কার্বোহাইড্রেড এর ভূমি অতুলনীয়। আপনার নিয়মিত
খাবারের তালিকায় অবশ্যই কার্বোহাইড্রেড রাখা উচিত। ভাত ও আটা কার্বোহাইড্রেডের অন্যতম
উৎস। প্রতিদিন কমপক্ষে ২ বার কার্বোহাইড্রেড যুক্ত খাবার খাবেন।
৪। বেশি ক্যালোরি
গ্রহন -
যাদের ওজন বেশি তারা ওজন কমানোর জন্য কম ক্যালোরি গ্রহ
করে থাকে। কিন্তু ওজন বৃদ্ধির জন্য আপনার এর উল্টা করতে হবে অর্থাৎ যতটুকু ক্যালোরি
বার্ন হবে তার দ্বিগুণ ক্যালোরি গ্রহণ করতে হবে। ওজন বৃদ্ধি করতে চাহিদার চেয়ে বেশি
ক্যালোরি গ্রহন করুন। ওজন বৃদ্ধি করতে প্রতিদিন ৪০০-৫০০ ক্যালোরি বা তার বেশি গ্রহণ
করুন। এভাবে ৭দিন ক্যালোরী গ্রহন করলেই ওজন
বৃদ্ধি পেতে থাকবে।
৫। সঠিক প্রোটিন গ্রহণ -
আপনার ওজন বৃদ্ধি করতে ক্যালোরিই একমাত্র উপাদান নয়।
এর পাশাপাশি প্রয়োজনীয় প্রোটিন গ্রহণ করুন। প্রয়োজনীয় প্রোটিন গ্রহন না করলে অতিরিক্ত
ক্যালোরি ফ্যাট তৈরী করবে যা আপনার জন্য ক্ষতিকর। দৈনৈন্দিন খাদ্যতালিকায় ডিম, দুধ,
ডাল সহ অন্যান্য প্রোটিন জাতীয় খাবার রাখুন।
৬। ড্রাই ফ্রুটস
খাবেন -
প্রতিদিন সকালে খালি পেটে কয়েকটি কাজু বাদাম ও কিসমিস
খেতে পারেন। অনেকে মনে করেন যে, কিসমিস রাত্রে ভিজিয়ে রেখে সকালে পানিসহ তা খেলে আরও
উপকার বেশি। তবে আপনি যে ভাবেই খান না কেন এই দুইটি খাবার নিয়মিত খেতে কোনভাবেই ভুলবেন
না।
৭। দুশ্চিন্তামুক্ত
থাকুন -
দুশ্চিন্তা একজন মানুষের জীবনকে কুড়ে কুড়ে শেষ করে দেয়।
তাই সব সময় দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকুন। ওজন কমাতে ও বাড়াতে উভয় ক্ষেত্রেই দুশ্চিন্তা মুক্ত
থাকা প্রয়োজন।
৮। পরিমিত ঘুমান
-
একজন প্রাপ্ত পয়স্ক মানুষের প্রতিদিন কমপক্ষে ৮ ঘন্টা ঘুমানো উচিত। এছাড়া প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে
উঠে খালি হাতের ব্যায়াম করা উচিত যা ওজন বৃদ্ধিতে খুব কার্যকরী।
৯। ঘুমানোর আগে
দুধ ও মধু খান -
রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে গরম দুধ ও মধু খান। এটি বেশ পুষ্টিকর
এবং ক্যালোরিযুক্ত খাবার। রাতে ঘুমানোর আগে এই দুটি খাবার ওজন বৃদ্ধি করতে অতি কার্যকরী।
১০। ডায়েটে চকলেট
এবং চিজ রাখুন -
ওজন বৃদ্ধিতে আইসক্রিম, পেস্ট্রি, বার্গার ইত্যাদি খুবই কার্যকরী।
এতে ফ্যাট থাকে বিধায় অতিরিক্ত খেলে তা আপনার জন্য ভীষণ ক্ষতিকর। তাই আপনি পরিমাণমতো
খাবেন। প্রতিদিনের খাবার তালিকায় চকলেট ও চিজ রাখতে পারেন।
শেষ কথা -
মানুষের শরীরের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিশুদ্ধ
পানির ভূমিকা অপরিসীম। ওজন বাড়াতে বা কমাতে উভয় ক্ষেত্রেই পরিমিত পানি খেতে হবে। আশা
করি উপরের নিয়মগুলি যথাযথভাবে মেনে চললে আপনি আপনার ওজন বৃদ্ধি করতে পারবেন। সুস্বাস্থ্য
কামনায় এখানেই শেষ করছি। ধন্যবাদ।
পোস্ট ট্যাগ
-
৭ দিনে মোটা হওয়ার সহজ উপায়, ইসলামে মোটা হওয়ার উপায়,
মোটা হওয়ার ফর্মুলা, ১৫ দিনে মোটা হওয়ার উপায়, মোটা হওয়ার খাদ্য তালিকা, সকালে
খালি পেটে কি খেলে মোটা হওয়া যায়, মোটা হওয়ার ঔষধের নাম, মোটা হওয়ার ব্যায়াম,
কাঁচা ছোলা খেলে কি মোটা হওয়া যায়, কি খেলে মোটা হওয়া যায় তাড়াতাড়ি, মোটা হওয়ার
জন্য প্রতিদিনের খাদ্য তালিকা, সাত দিনে মোটা হওয়ার উপায়, খেজুর খেলে কি মোটা হওয়া
যায়, কি ঔষধ খেলে মোটা হওয়া যায়, মোটা হওয়ার প্রাকৃতিক ঔষধ, স্থায়ী মোটা হওয়ার
ঔষধ, মোটা হওয়ার ঔষধের নাম