বর্তমানে বাত ব্যথা একটি কষ্টদায়ক রোগ। ভুক্তভোগীই একমাত্র বুঝতে
পারে এর যন্ত্রনা। ব্যথার ওষুধ খেয়ে সাময়িক স্বস্থি বোধ করলেও এর স্থায়ী সমাধান হয়
না। একাধারে দীর্ঘদিন ব্যথার খাওয়ার ফলে কিডনি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। আমরা কিছু প্রাকৃতিক
উপায় অবলম্বল করে এই যন্ত্রনাদায়ক ব্যথাকে সহনীয় পর্যায়ে রাখতে পারি। দীর্ঘদিন এই টিপসগুলি
অনুসরন করলে ব্যথা থেকে সম্পূর্ণভাবে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
বাত ব্যথার সমাধানে প্রাকৃতিক
উপায়গুলি নিম্নরুপ -
১। আদা চা -
আদা কুচি ও চা পাতা পানিতে দিয়ে ১৫ মিনিট ফুটিয়ে চা তৈরী করে তা
পান করুন। আপনি চাইলে দুধ দিয়েও আদা চা করতে পারেন। এতে সাময়িক ভাবে ব্যথা থেকে মুক্তি
মিলবে। জিনজার টি-ব্যাগ ব্যবহার করেও চা তৈরী করতে পারেন।
২। জাঙ্ক ফুডকে না বলুন
-
জাঙ্ক ফুড ও প্যাকেটজাত খাবারকে না বলুন। সুইডিস গবেষণা মতে, যারা মশলাদার খাবার এর পরিবর্তে বেশি টাটকা সবজি, ফলমূল, মাছ, অলিভ অয়েল
খেয়ে থাকেন, তাদের বাত রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম।
৩। ঘরোয়া মিশ্রণ -
বাত ব্যথা কমাতে ঘরেই বানাতে পারেন সহজ একটি প্রাকৃতিক মিশ্রণ। মিশ্রনটি তৈরী করতে আপনার প্রয়োজন হবে কয়েক
চামচ লঙ্কাগুড়ো ও ২-৩ চামচ অলিভ অয়েল। চিকিৎসকদের মতে, এটা প্রাচীন ভেসজ পদ্ধতি। এই মিশ্রণটি লাগালে প্রথম
দিকে জ্বালা করবে। পরবর্তীতে ধীরে ধীরে ব্যথা কমে যাবে। পুরোপুরি ব্যথা কমতে এক সপ্তাহ
সময় লাগতে পারে।
৪। নিজ হাতে বাসন মাজুন
-
কি অবাক হচ্ছেন ? এই পদ্ধতিতে প্রযোজনীয় কাজের পাশাপশি আপনার হাতের ব্যায়াম হবে।
যদি উষ্ণ গরম জলে কাজটি করতে পারেন তাহলে আরোও ভালো উপকার পাবেন।
৫। গরম ও ঠাণ্ডা পানিতে
চিকিৎসা -
দ্রুত বাতের ব্যথা কমাতে গরম ও ঠান্ডা পানির এই পদ্ধতি খুবই কার্যকরী।
একটি পাত্রে বরফসহ পানি ও অন্য পাত্রে গরম পানি নিন। প্রথমে ব্যথার স্থানটি ঠাণ্ডা
পানিতে ১ মিনিট ডুবিয়ে রাখুন। পরে ব্যথার স্থানটি গরম পানিতে ৩০ সেকেন্ড ডুবিয়ে রাখুন।
এই ভাবে ১৫ - ২০ মিনিট এই পদ্ধতিটি প্রয়োজ করুন । এতে ব্যথা সহজেই কমে যাবে ও স্বস্থি
বোধ করবেন।
৬। সাঁতার কাটুন -
সাঁতারকে সবচেয়ে উত্তম ব্যয়াম মনে করা হয়। বাতের ব্যথা কমাতে সাঁতার হচ্ছে সবচেয়ে ভাল
ব্যায়াম। পানির ভারশূন্যতা পেশীর চাপ কমায়। তাইওয়ানের গবেষণা মতে, হাঁটু ও নিতম্বের
জোর বাড়াতে ভূমিকা রাখে সাঁতার। এছাডাও সাঁতার শরীরের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে ও ব্যথা
কমিয়ে দেয়।
৭। গ্রিন টি -
কেস
ওয়েস্টার্ন রিসার্ভ ইউনিভার্সিটির গবেষণা মতে, দিনে ৪ কাপ গ্রিন পান বাতের ব্যথা কমাতে
ভূমিকা রাখে। চায়ে পলিফেনল অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট থাকায় তা অস্টিও আর্থারাইটিস কমাতে সাহায্য করে।
৮। ভিটামিন সি -
ভিটামিন
সি সমৃদ্ধ খাবার পেশি ব্যথা কমাতে কার্যকরী। কমলা লেবু ও আঙুর ফলে প্রচুর ভিটামিল সি
পাওয়া যায়। ভিটামিন সি তে প্রচুর পরিমাণে কোলাজেন থাকায় তা প্রোটিন তৈরি করে। ফলে হাড়ের
শক্তি বৃদ্ধি পায়।
৯। ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড
-
ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড পেশির শক্তি বাড়ায়। প্রচুর পরিমানে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড পাওয়া যায়
রুই, টুনা, স্যামন মাছে। ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড পেশির শক্তি বাড়াতে কার্যকরী।
১০। বাদাম -
আখরোট,
পেস্তা, আমন্ড বাদামে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, প্রোটিন, জিঙ্ক, ভিটামিন-ই এ ফাইবার
প্রচুর পরিমানে থাকায় তা অস্টিও আর্থারাইটিস এবং রিউম্যাটয়েড আর্থারাইটিস কমাতে কার্যকরী।
১১। খালি পায়ে হাঁটুন -
প্রায় ৭৫ শতাংশ মানুষ অস্টিও আর্থারাইটিসে আক্রান্ত। খালি পায়ে হাটলে বাত এবং পেশির
ব্যথা কমে যায়। নিয়মিত খালি পায়ে হাটার ফলে ব্যথা প্রায় ১২ শতাংশ কমিয়ে আনা সম্ভব
শেষ কথা -
উপরোক্ত বিষয়গুলি যথাযথ ভাবে মেনে চললে আশা করি তীব্র যন্ত্রনাদায়ক
এই বাত ব্যথা থেকে আমরা মুক্তি পাবো। আশা করি আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের উপকারে আসবে।
আজ এ পর্যন্তই। ধন্যবাদ।
পোস্ট ট্যাগ -
কি খেলে বাতের ব্যথা বাড়ে, বাত ব্যাথার লতাপাতা ঔষধের নাম, বাতের
ব্যথার আয়ুর্বেদিক ওষুধ, বাত ব্যাথার ঔষধের নাম বাংলাদেশ, বাতের ব্যাথার ট্যাবলেট,
কি খেলে বাতের ব্যথা কমে, বাতের ব্যাথার হোমিও ঔষধ, বাতের ইনজেকশন