সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী পৃথিবীর সর্বমোট জনসংখ্যা ৭,৪৩২,৬৬৩,২৭৫
জন। বা প্রায় ৭৫০ কোটি। এই বিশাল জনগুষ্ঠির মাঝে আমেরিকার জনসংখ্যা মাত্র ৩২৪,১১৮,৭৮৭
জন। সারা বিশ্বের সর্বমোট জনসংখ্যার মাত্র ৫% মানুষ আমেরিকার নাগরিক।
মাত্র ৩২ কোটি মানুষ বসবাসকারী দেশ আমেরিকার হাতেই এই পৃথিবীর সকল
দেশের অর্থনীতির নিয়ন্ত্রণ। কি এমন ম্যাজিক আছে তাদের হাতে ? তাদের নিজস্ব কারেন্সী হচ্ছে ডলার। এই ডলারই সারা পৃথিবীর কারেন্সী
হিসাবে ব্যবহার হয়।
বর্তমান বিশ্ব ব্যবস্থা যে অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে তাতে একজন মানুষ বা একটি দেশ বড় হওয়ার মূল মন্ত্র মূলত দুটি
-
(১) বৃহৎ নেটওয়ার্ক।
(২) শক্তিশালী অর্থনীতি।
১। বৃহৎ নেটওয়ার্ক
-
আমেরিকার নেটওয়ার্ক রয়েছে পুরো পৃথিবী জুড়ে। বের্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে
ইচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায় তাদের নেটওয়ার্কের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই।
তাদের নেটওয়ার্কটা যোগাযোগ, অর্থনীতি, কৌশল, শক্তি ও মেধার। এ সবকিছু
মিলেই বিশ্বব্যাপী তাদের শক্তিশালী নেটওয়ার্ক। আমেরিকান ডলার হলো পৃথিবীর একমাত্র ইন্টারন্যশনাল
কারেন্সি।
আমেরিকাকে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করতে তাদের তৈরী করতে হয়েছে
অত্যন্ত শক্তিশালি ‘অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা।
২। শক্তিশালী অর্থনীতি -
আমেরিকার অর্থনীতি এতটাই শক্তিশালী যে তা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তাদের স্বার্থ রক্ষার্থে
হাজার হাজার বিলিয়ন ডলার খরচ করতেও কার্পণ্য করে না। তারা তাদের প্রত্যেক নাগরিকের বিলাসী জীবনযাপন নিশ্চিত করে।
যোগাযোগ ব্যবস্থা -
একটি সফল অর্থনীতির
সবচেয়ে অগ্রাধিকার ভিত্তিক খাত হচ্ছে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরী করা। আমেরিকার যোগাযোগ
ব্যবস্থা খুবই উন্নত বিধায় তাদের দেশের নাগরিকদের কোন কর্মঘন্টা নষ্ট হয় না। তারা তাদের
সময়কে পুরোপুরিই কাজে লাগায়। যেখানে আমাদের দুই ঘন্টার পথ পাড়ি দিতেই কখনও কখনও অফিস
টাইম শেষ হয়ে যায়।
চিকিৎসা ব্যবস্থা -
আমেরিকায় রয়েছে বর্তমান বিশ্বের সেরা চিকিৎসা ব্যবস্থা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কর্তা ও ধনাঢ্য ব্যক্তিরা সেখানে চিকিৎসা সেবা নিয়ে থাকে। তারা তাদের শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ রেখেছে চিকিৎসা ক্ষেত্রেও। আমেরিকায় তাদের নাগরিকদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা পেতে কোন ভোগান্তির স্বীকার হতে হয় না।
নিরাপত্তা ব্যবস্থা -
আমেরিকা তাদের শক্তিশালী অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার পাশাপাশি তাদের নাগরিকদের ও সম্পদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অতুলনীয় নিরাপত্তা বেস্টনী গড়ে তুলেছে। নিরাপত্তার ক্ষেত্রে তাদের প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার করেছে। তাদের নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থার কারণে তাদের নাগরিকেরা নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারে।
ফোন, ইন্টারনেট ও ডাক যোগাযোগ
-
আমেরিকার নাগরিকরা মাত্র ১৫ ডলারেই মাসব্যাপী আনলিমিটেড ফয়েস কল,
টেক্সট ও উন্নত গতির ইন্টরনেট ব্যবহার করতে পারে। আমেরিকানরা সব ধরনের কেনা কাটা অনলাইনেই
করে অভ্যস্ত। অনলাইন শপিং এর ক্ষেত্রে তারা আমাজন ও ই-বে এর মত ই-কমার্স সাইটগুলোর
উপর নির্ভর করে।
প্রযুক্তি ও সমরাস্ত্র -
প্রযুক্তির দিক থেকে আমেরিকা এতটাই উন্নত যে, এখন পর্যন্ত অন্য কোন রাষ্ট্র তাদের ধারের কাছেও নেই। সাধারণ প্রযুক্তির উন্নয়নের পাশাপাশি সমরাস্ত্র প্রযুক্তি তারা বিশ্বের ১নম্বর দেশ। আমেরিকান সমরাস্ত্র ক্রয় করার জন্য অন্যান্য দেশ মুখিয়ে থাকে। মার্কিন সমরাস্ত্র বিভিন্ন রপ্তানী করে যে আয় হয় তা তাদের আয়ের উৎসগুলোর মধ্যে অন্যতম। এ জন্য আমেরিকাকে বর্তমান বিশ্বের সুপার পাওয়ার বলা হয়।
মুদ্রা ব্যবস্থাপনা -
নিউইয়র্ক ষ্টেট কর্তৃপক্ষ তাদের প্রত্যেক নাগরিককে একটি বেনিফিট
কার্ড প্রদান করে। ইন্সুরেন্স কোম্পানীগুলি আমেরিকান নাগরিকদের ডেকে ডেকে ইন্সুরেন্স
সেবা নিতে বলে। একজন নাগরিকের বার্ষিক আয়ের উপর নির্ভর করে ইন্সুরেন্স এর প্রিমিয়াম
নির্ধারিত হয়। যদি কোন নাগরিকের তার পুরো পরিবারের বার্ষিক আয় ২৭ হাজার ডলারের কম হয়
তাহলে তার পরিবারের সকলেই ‘ফ্রি হেলথ ইন্সুরেন্স’ সুবিধা পাবেন। টাকা যত বেশী সচল থাকবে
অর্থনীতি তত বেশী উন্নত হবে এই নীতিতে আমেরিকা বিশ্বাস করে।
আমেরিকা তাদের মূদ্রাকে সচল রেখেই তাদের শক্তিশালী অর্থনৈতিক ব্যবস্থা
গড়ে তুলেছে। ফলে তারা আজ বিশ্ব অর্থনীতে নেতৃত্ব দিচ্ছে।
পোস্ট ট্যাগ -
যুক্তরাষ্ট্র কি প্রযুক্তিতে পিছিয়ে পড়েছে, চীন কি আমেরিকাকে
ছাড়িয়ে যাবে, বিশ্বে আমেরিকার অবস্থান কত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রবৃদ্ধিতে প্রযুক্তির
প্রভাব