কেউ কেউ ট্রাফিক জ্যামে বাসে বসেও বই পড়তে পারে। কেউ আবার অস্বস্থিকর
পরিবেশে পড়ালেখায় মনোযোগ রাখতে পারেন না। আবার অনেকের কোন অবস্থাতেই পড়ালেখায় মনোযোগ বসাতে
পারেন না। তাঁদের চাই পাঁখির মত স্বাধীন ভাবে উড়ে বেড়াতে। তবে আপনি হয়তো আশ্চর্য হযে,
এমন মানুষও আছে যারা নীরব পরিবেশে পড়তে পারেন না। অনেকেই তার পছন্দের মিউজিক প্লে করে
পড়তে বসেন। প্রত্যেকটি কাজের জন্য পরিবেশ একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তবে এর বাইরেও একান্ত ব্যক্তিগত কিছু বিষয় থাকে, যার ওপর মনঃসংযোগের
ক্ষমতা নির্ভর করে । সময় যাচ্ছে, দিন যাচ্ছে কিন্তু পড়ায় মন বসছে না, পড়ার কথা শুনলেই
শুধু প্যারা লাগে। পড়ালেখায় প্যারা লাগার কারণ ও এর প্রতিকার নিয়ে আজ আলোচনা করার চেষ্টা
করবো ইনশা-আল্লাহ।
১। সময়কে গুরুত্ব দিন -
আপনি যখন যে কাজটি করবেন তখন তাতে পূর্ণ মনোযোগ দিতে হবে। পড়ালেখার
সময় আপনার মাথায় যদি অন্য কোন বিষয় চলে আসে, আর সেটি যদি প্রয়োজনী হয় তাহলে আপনার পড়ালেখায়
মনোযোগ বসবে না। পড়তে বসলেই আপনার প্যারা লাগবে যতক্ষণ না আপনার ভাবনায় থাকা কাজটি
সমাধান হচ্ছে। তাই নিজেকে অন্য সকল চিন্তা থেকে মুক্ত হয়ে পড়তে বসতে হবে। যদি কোন বিষয়
মাথায় আসে, সেটা যদি প্রয়োজনীয় হয়, তাহলে তার নোট রাখুন এবং পড়ায় মনোযোগ দিন। পড়তে
বসার আগে মনকে পড়ার দিকে স্থির করুন। মনে করুন এই মূহুর্তে আপনার প্রথম এবং একমাত্র
কাজ পড়া সম্পন্ন করা।
২। মনকে স্থির করুন -
পড়তে বসার আগে বাসার অন্য সদস্যদের বলে রাখুন বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া
যেন আপনাকে না ডাকে। পড়া শেষ করে প্রয়োজনী কথা সারবেন। আপনার মোবাইলকে সাইলেন্ট মোড়ে
রাখুন। পড়ার মাঝে কিছুতেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা অন্য কোন সাইটে ব্রাউজ করা থেকে
বিরত থাকুন। সম্ভব হলে পড়ার সময় মোবাইল কিছুটা দূরে রাখুন। পড়ালেখার প্রয়োজনে আপনি
যদি পরিবার থেকে দূরে থাকেন তাহলে তাদেরকে আপনার পড়ার নির্দিষ্ট সময়টি জানিয়ে রাখুন।
সেই সাথে আপনার মোবাইল সাইলেন্ট রাখার বিষয়টিও জানান। জরুরী প্রয়োজনে আপনার সাথে যোগাযোগের
বিকল্প কারোও নাম্বার পরিবারকে দিয়ে রাখুন।
পড়ালেখার প্রয়োজনে ইন্টারনেট ব্রাউজ করার প্রয়োজন হলে সেই সময় আপনার প্রয়োজনীয় কাজ
সেরে মোবাইলটি দূরে রাখুন।
৩। মনকে গুরুত্ব দিন -
আপনার মন যে সময়টায় পড়ার জন্য উপযুক্ত সেই সময়কেই পড়ার জন্য নির্বাচন
করার চেষ্টা করুন। যে কাজটি করার জন্য আপনার মন বার বার তাড়া দেয় সেই কাজটি পড়তে বসার
আগেই সম্পন্ন করুন। যখন একেবারেই পড়তে চাইবে না তখন আপনার পছন্দের কোন কাজ করে মনকে
ফ্রি করে তারপর পড়তে বসুন। যখন বোরিং ফিল হবে তখন উন্মুক্ত ছাদের খোলা হাওয়া, খোলা
মাঠে বা বারান্দায় বাগান করা অথবা পোষা প্রাণীর সঙ্গে কিছুটা সময় ব্যয় করতে পারেন।
৪। ইতিবাচক জীবনযাপন -
পরিমিত ঘুম, পুষ্টিকর খাবার ও নিয়মিত ব্যয়াম এর সবই ঠিকঠাক হওয়া
চাই। তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যাওয়া ও সকাল সকাল ঘুম হতে উঠার অভ্যাস করতে হবে। সময়ের পড়া সময়েই
শেষ করতে হবে। পড়া জমিয়ে রাখলে মাথায় অতিরিক্ত চাপ তৈরী হবে ও পড়ায় মনোযোগ বসবে না।
ক্ষুধার্ত অবস্থায় পড়তে বসা উচিত নয়। নেশাজাতীয় দ্রব্য এড়িয়ে চলুন।
যতটুকু পড়বেন, তা বুঝে বুঝে পড়ার চেষ্টা করুন। পড়া না বুঝে শুধু
মুখস্থ করলে কোনো ফল পাওয়া যায় না। ক্লাসের পড়া ক্লাশেই বুঝে নিন। পড়া না বুঝলে প্রশ্ন
করতে দ্বিধা করবেন না। প্রয়োজনে বন্ধুদের নিয়ে গ্রুপ স্টাডি করুন। একাধারে দীর্ঘ সময়
পড়ালেখা না করে মাঝে মাঝে বিরতি দিন। পড়ার মাঝে বিরতির সময় স্মার্টফোন ব্যবহার করা
উচিত নয়।
৬। বলার অভ্যাস করুন -
যে পড়াটি আপনি শিখবেন তা সহপাঠী বা বন্ধুকে শুনাতে পারেন। কেউ না
থাকলে নিজেই জোরে জোরে পড়ুন। অন্যকে পড়া বলার অভ্যাস করলে তা আপনার মনোযোগ বৃদ্ধিতে কাজ করবে।
৭। পড়ার অভ্যাস করুন -
পাঠ্য পুস্তকের বাইরেও পড়ার অনেক বই আছে, যা আপনার পড়ার অভ্যাস
নিয়মিত করতে সাহায্য করবে। আপনার পছন্দের কোন বই পড়তে পারেন।
পোস্ট ট্যাগ -
পড়ায় মন বসে না কেন, পড়া মুখস্ত করার বৈজ্ঞানিক কৌশল, পড়া মনে
রাখার ঔষধ, কোন সময় পড়লে পড়া মনে থাকে, প্যারা অর্থ কি, কম সময়ে বেশি পড়ার উপায়,
কি খেলে পড়া মনে থাকে