মানব দেহের বিভিন্ন রোবোটিক অঙ্গ ব্যবহার করে স্বাভাবিক জীবন যাপন
করছেন অনেক মানুষ। প্রতি বছর সারা বিশ্বে বহু মানুষের বিভিন্ন আকস্মিক দুর্ঘটনায় অঙ্গ
হানি হয়ে থাকে। কারও হাত, কারও পা দুর্ঘটনায়
দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। পঙ্গুত্ব বরন করা মানুষদেরকে কৃত্রিম অঙ্গ সংযোজনের মাধ্যমে
স্বাভাবিক জীবন যাপন করার সুযোগ তৈরী করে দেওয়ার প্রচেষ্টা বিজ্ঞানীদের বহুদিনের। বাংলাদেশের
চট্টগ্রামের বাসিন্দা উদ্যোমী এক তরুণ উদ্যোক্তা ও বিজ্ঞানী জয় বড়ুয়া এই স্বপ্নটি বাস্তবায়িত করেছে। তিনি তার
দীর্ঘ্য দিনের প্রচেষ্টায় সফলভাবে রোবোটিক
হাত তৈরী করতে সক্ষম হয়েছেন। যারা হাত বিহীন তাদের কষ্ট ভুলাতে রোবটিক হাত এক অনন্য
আবিষ্কার।
রোবটিক হাত কিভাবে কাজ
করে?
সিলিকন গ্লাভস এ আবৃত থাকে রোবোটিক হাত। তা দেখতে অনেকটা মানুষের হাতের মতোই। মস্তিষ্কের
সংকেত পেলে এ রোবটিক হাতগুলো মানুষের হাতের মতই দারুণ কাজ করে। বিভিন্ন দুর্ঘটনায় হাত
হারানো মানুষগুলো এই রোবটিক হাত ব্যবহার করে সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষের মতই কাজকর্ম করতে পারে।
রোবটিক হাত কয় ধরনের?
ব্যবহারকারির নিয়ন্ত্রনের সুবিধার্থে ৪ ধরনের রোবোটিক হাত তৈরি
করেছে উদ্যোক্তা -
১) ভয়েস কন্ট্রোল
২) নার্ভ কন্ট্রোল
৩) লেগ কন্ট্রোল
৪) অটো কন্ট্রোল
এ হাত গুলো মস্তিষ্কের সংকেত, কণ্ঠস্বর ও পায়ের সাথে ডিভাইস যুক্ত
করেও নাড়াচাড়া করা যায়। ব্যবহারকারিদের মাঝে যার যেটা সুবিধা হয়, সে অনুযায়ী রোবটিক
হাত বানিয়ে ব্যবহার করা যাবে।
রোবটিক হাত দিয়ে কি কি
কাজ করা যাবে?
একজন মানুষের সুস্থ-স্বাভাবিক হাতের ভারী কাজগুলো করতে না পারলেও
এ রোবটিক হাত দ্বারা অতি প্রয়োজনীয় কাজ গুলো সহজেই করা যাবে। এই হাতের সাহায্যে প্রায়
১ কেজি সমপরিমান ওজন উঠানো সম্ভব।
রোবটিক হাত ব্যবহার কারীদের
অনুভূতি কি?
বাংলাদেশ সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের দুর্ঘটনায় হাত হারানো বা ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তিরা রোবটিক হাত ব্যবহার করে ইতিবাচক মনোভাব
ব্যক্ত করেছেন। তারা আগের থেকে অনেক ভালো ও স্বাভাবিক জীবন যাপন করছেন। রোবটিক হাত
ব্যবহারে তারা সন্তুষ্ট।
রোবটিক হাত লাগাতে কত খরচ
হয়?
বিদেশি কৃত্রিম হাত প্রতিস্থাপনে প্রায় ৮ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হলেও
আমাদের নিজ দেশে এর ব্যয় অনেক কম হবে বলে জানিয়েছেন উদ্ভাবক। বাংলাদেশে একটি রোবটিক
হাত তৈরী করতে সর্বোচ্চ ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়।
উদ্যোক্তা আরও যে সকল প্রজেক্ট
নিয়ে কাজ করছেন : -
১) হোম ক্লিনিং রোবট
২) উভচর রোবট
৩) রোবোটিক থার্ড হ্যান্ড
৪) ওয়্যারলেস হ্যান্ড
৫) হেড মেসেজ ডিভাইস
৬)এলিন ওয়ান ফিউচার কার
৭) রোপ ক্যামেরা
৮) ওয়্যারলেস ক্যামেরা
৯) কথা বলা ইত্যাদি।
শেষ কথা : -
সারা বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে আমাদের মাতৃভূমি বাংলাদেশও প্রযুক্তি খাতে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের
রয়েছে এক ঝাক মেধাবী তরুণ। সরকারি বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে আমাদের তরুণ উদ্যোক্তারা
আরও সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। ফলে বিশ্বে সমুজ্জল হবে বাংলাদেশের সুনাম ও সুখ্যাতি।
অদূর ভবিষ্যতে সারা বিশ্বে আমাদের বিজ্ঞানীদের আবিষ্কৃত প্রযুক্তি পণ্যগুলি রপ্তানি
করে আর্থসামাজিক উন্নতি সাধিত হবে ইনশা-আল্লাহ।
পোস্ট ট্যাগ-
রোবট কিভাবে কাজ করে, রোবট দিয়ে কি কি সমস্যা সমাধান করা যায়,
রোবটিক্স এর ব্যবহার গুলো কি কি, রোবট ও মানুষের মধ্যে পার্থক্য, রোবট ব্যবহারের সুবিধা,
রোবটিক্স প্রযুক্তি মানুষের কাজকে কিভাবে সহজ করেছে, রোবটিক্স কি বাংলা, রোবট কোন কাজে
ব্যবহার করা হয় mcq