আমাদের দৈনৈন্দিন কাজকে সহজ করে দিয়েছে জিপিএস প্রযুক্তি। কাজের
প্রয়োজনে আমাদের বিভিন্ন স্থানে ছোটাছুটি করতে হয়। অচেনা এলাকায় গেলে আমাদের পথ চিনতে
বিপত্তিতে পড়তে হয়। অচেনা জায়গায় আমাদের পথ চেনাতে গাইড হিসেবে কাজ করে GPS-Global
Positioning System (গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম) প্রযুক্তি। জিপিএস হচ্ছে কৃত্রিম উপগ্রহ
ভিত্তিক একটি যোগাযোগ ব্যবস্থা। সংক্ষেপে এই প্রযুক্তিকে GPS (জিপিএস) বলা হয়।
১৯৭০-এর দশকের শুরুর দিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়
এই জিপিএস প্রযুক্তির উদ্ভাবন করেন। বর্তমানে স্মার্টফোনে গুগল ম্যাপ অ্যাপটি ডিফল্ট
হিসেবে দেওয়া থাকে। ফলে এই অ্যাপটি ব্যবহার করে জিপিএস প্রযুক্তির সাহায্যে অচেনা জায়গার
সকল তথ্য ম্যাপসহ দেখা যায়।
জিপিএস কি?
GPS (জিপিএস) এর পূর্ণরুপ Global Positioning System (গ্লোবাল পজিশনিং
সিস্টেম)। ইন্টারনেট ব্যবহার করে নির্দিষ্ট ডিভাইসের মাধ্যমে সকল জায়গার অবস্থান সম্পর্কে
বিস্তারিত তথ্য ম্যাপসহ জানা যায় তাই জিপিএস। জিপিএস হচ্ছে একটি গ্লোবাল ন্যাভিগেশন
স্যাটেলাইট সিস্টেম। যার সাহায্যে আমাদের অবস্থান নিশ্চিত করা যায়। স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের
কাছে একটি পরিচিত নাম হচ্ছে জিপিএস (GPS)।
জিপিএস এর প্রধান অংশ সমূহ
: -
জিপিএস GPS এর প্রধান অংশ ৩টি -
১) Space segment
২) Control segment
৩) Receiver
এই অংশগুলি সমন্বিতভাবে সময় ও অবস্থান নেভিগেশন সম্পর্কিত তথ্যসমূহ সঠিক ভাবে নিরুপণ করে।
জিপিএস (GPS) কয় প্রকার?
সাধারণত ৫ ধরনের জিপিএস দেখা যায়। যেমন -
1) Assisted GPS
2) Simultaneous GPS
3) Differential GPS
4) Non-differential GPS
5) Mapping and non-mapping GPS
জিপিএস (GPS)এর কাজ কি?
১) জিপিএস ব্যবহার করে আবহাওয়ার পূর্বাভাস জানা সম্ভব। এ জন্য প্রাকৃতিক
দূর্যোগের সময় জিপিএস প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়।
২) যেকোনো ব্যাক্তি বা বস্তুর উপর নজর রাখতে জিপিএস ব্যবহার করা
হয়। কোন ব্যাক্তি বা বস্তু কোথায় যাচ্ছে, কত সময় কোথায় অবস্থান করছে, কত গতিতে যাচ্ছে
ইত্যাদি বিষয় জিপিএস এর মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা যায়।
৩) অচেনা পথ দেখাতে GPS প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। আপনার গন্তব্যে
যাওয়ার রাস্তা, গন্তব্যের আশেপাশের হোটেল ইত্যাদি সহ বিভিন্ন তথ্য জানা যায়।
৪) নিজের শারীরিক কার্যকলাপ এর বিবরন জানতেও জিপিএস ব্যবহার করা
যায় । যেমন- দিনে কত মিটার হাঁটা হলো, কত গতিতে হাটা হলো, কত সময় হাটা হলো, কত সময়
দাঁড়ালো এবং কত সময় দৌড়ালো ইত্যাদি বিষয় নিখুত ভাবে নিরুপন করা যায়।
৫) চুরির হাত থেকে রক্ষা পেতে আপনার বাইক (bike) বা কার (car) এ
জিপিএস ডিভাইস লাগাতে পারেন। আপনার গাড়ির গতিবিধি ঘরে বসেই পর্যবেকষণ করতে পারবেন।
৬) বর্তমানে স্মার্টফোন, হাত ঘড়ি, পিসি সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে জিপিএস(GPS)
প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে।
জিপিএস কিভাবে কাজ করে?
আমাদের জিপিএস ডিভাইস থেকে সিগন্যাল যায় মহাকাশে পাঠানো উপগ্রহের
কাছে, আমাদের পাঠানো সিগন্যাল এনালাইসিস করে উপগ্রহ আমাদের ডিভাইসে সিগন্যাল পাঠায়।
বর্তমানে জিপিএস (GPS) প্রযুক্তি অনেক ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত হয়। যেমন:-স্মার্টফোন,
গাড়ি, বাইক, বাসা ইত্যাদি। এটা মূলত trilateration
প্রযুক্তির সাহায্যে কাজ করে।
জিপিএস (GPS) এর ব্যবহার
-
বর্তমানে বিভিন্ন কাজে
GPS (জিপিএস) প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়। যেমন -
১) Tracking – যেকোনো পাসোনাল মুভমেন্ট জানার জন্য।
২) Mapping – গ্লোবাল ম্যাপ তৈরিতে।
৩) Location –অবস্থান নির্ণয় করতে।
৪) Navigation – সুনির্দিষ্ট গন্তব্যে যাওয়ার জন্য।
৫) Timing – সময় ভিত্তিক ম্যাপ তৈরীতে।
এ ছাড়াও প্রযুক্তির প্রসারের ফলে দিন দিন জিপিএস ব্যবহারের ক্ষেত্র
বৃদ্ধি পাচ্ছে।
শেষ কথা -
GPS প্রযুক্তির আবিস্কার আমাদের জীবনকে সহজ করে দিয়েছে। এই প্রযুক্তির
সাহায্যে খুব সহজেই অচেনা গন্তব্যে যেতে পারি। জিপিএস আমাদের গাইড হিসেবে কাজ করে।
বর্তমানে অনেক পশু, পাখির গতিবিধি পর্যবেক্ষনেও জিপিএস প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে।
পোস্ট ট্যাগ -
জিপিএস এর পুরো নাম কি, জিপিএস এর সুবিধা গুলো কি কি, জিপিএস এর
বিভিন্ন অংশের নাম, জিপিএস এর ব্যবহার, Gps এর সুবিধা ও অসুবিধা, জিপিএস এর বৈশিষ্ট্য,
জিপিএস সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা কর, জিপিএস কিভাবে চালু করতে হয়