মানুষের মস্তিষ্ক এবার বসানো হবে নিউরালিংক নামের এক বিশেষ চিপ!
নিউরালিংকের এই চিপ মস্তিষ্কে প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে মানবদেহের স্থুলতা , অটিজম , হতাশা , সিজোফ্রেনিয়াসহ বিভিন্ন শারীরিক ও মানসিক
জটিলতা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব হবে। পাশাপাশি ওয়েব ব্রাউজিং ও টেলিপ্যাথির মতো কাজে
মানুষের মস্তিষ্ককে সক্ষম করে তোলা সম্ভব হবে।
নিউরালিংক আসলে কি?
এই চিপটির কোনো ব্র্যান্ড নাম নেই। নিউরালিংক সংক্ষেপে ‘লিংক’ হচ্ছে ইলেকট্রোডযুক্ত ২৩×৮ মিলিমিটার আকৃতির ১০২৪
টি চ্যানেল বিশিষ্ট একটি চিপ। এর ইলেকট্রোডগুলো নন-করোসিভ অর্থাৎ ক্ষয় হয় না এমন পদার্থ
দিয়ে তৈরি।
নিউরালিংক চিপ ব্রেইনে
কিভাবে সেট করবে?
আগ্রহী ব্যক্তিদের ব্রেনে নিউরালিংক চিপ বসিয়ে বেশ কিছু পরীক্ষা
নিরীক্ষা করা হবে। এর সাথে ইলেকট্রোড যুক্ত থাকবে । পরিক্ষা-নিরিক্ষা সফল হলে মাথার
খুলির ভেতরে কিছু তারের সংযোগ দেয়া থাকবে।
ইলন মাস্কের সংস্থাটি ইন-হিউম্যান ক্লিনিক্যাল স্টাডি শুরুর অনুমোদন
পেয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন থেকে। প্রতিষ্ঠানটি মানুষের
মস্তিস্কের সাথে কম্পিউটার যুক্ত করে দৃষ্টিশক্তি এবং গতিশীলতা পুনরুদ্ধার করতে কাজ
করে যাচ্ছে।
প্যারালাইসিস,প্রতিবন্ধী
ও অন্ধত্বের চিকিৎসায় এর উপকারিতা কী?
ব্রেইন-ইমপ্লান্ট সংস্থা টি আশা প্রকাশ করছে: - প্যারালাইসিস ও
অন্ধত্বে আক্রান্ত ব্যাক্তিসহ প্রতিবন্ধীদেরও মোবাইল এবং কম্পিউটার প্রযুক্তি ব্যবহার
করতে মাইক্রোচিপ ব্যবহার করা হবে। পূর্বে বানরের ওপর পরীক্ষা-নিরিক্ষা করা চিপগুলো
এখানে কাজে লাগাতে পারে।
নিউরালিংক চিপের আকার কী?
ইলন মাস্ক বলেন,"চিপটি কিছুটা ফিটবিটের মতো ছোট ছোট তার দিয়ে
খুলিতে বসানো থাকবে। ফিটবিট হচ্ছে- ফিটনেস ট্র্যাকার। যা মানুষের হৃৎপিণ্ডের স্পন্দন ও রক্তচাপ রেকর্ড
করা স্মার্টফোনে থাকা চিপ এর মত।
নিউরালিংকের গুরুত্বপূর্ণ
কাজ কি?
এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে : -
১) পড়া (Read)
২) লিখা (Write)
কম্পিউটারের ভাষায় Read
বলতে যথাযথ সিগন্যাল শনাক্ত করাকে বুঝায়। অর্থাৎ ব্যবহারকারির কমান্ড বুঝতে পারা।
আর Write মানে আউটপুট দেওয়াকে
বুঝায়। নিয়মিত কম্পিউটার ব্যবহারকারিরা রিড-রাইটের
সঙ্গে পরিচিত।
নিউরালিংকের ব্রেইন চিপ
কীভাবে কাজ করে?
নিউরালিংক নিউরন থেকে আসা সিগন্যাল Read বা শনাক্ত করতে পারে এবং
সে অনুযায়ী Write করে অর্থাৎ নিউরনকে নির্দিষ্ট কাজের কথা ভাবার জন্য বৈদ্যুতিক ইমপালস
উৎপন্ন করে। ফলে নিউরনটি একটিভ হয়ে সেই কাজ সম্পাদন করতে পারে।
নিউরালিংক মানব জীবনে কি
কি উপকারে আসবে?
ইলন মাস্কের দাবি অনুযায়ী , নিউরালিংক এর বিশেষ চিপের মাধ্যমে মানবদেহের
স্থুলতা , অটিজম , হতাশা , সিজোফ্রেনিয়াসহ বিভিন্ন শারীরিক ও মানসিক
জটিলতা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব হবে। পাশাপাশি ওয়েব ব্রাউজিং ও টেলিপ্যাথির মতো কাজে
মানুষের মস্তিষ্ককে সক্ষম করে তোলা সম্ভব হবে। তিনি এও দাবী করেন যে, ভবিষ্যতে নিউরালিংক
ব্যবহারকারির স্মৃতি সংরক্ষন ও যথাসময়ে ‘রিপ্লে’ দেখাতে সক্ষম হবে। ফলে স্মৃতির ‘ব্যাকআপ’
রাখা ও পরে পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হবে। তার মতে, ভবিষ্যতে আপনার সংরক্ষণ করা স্মৃতি
নতুন কোনো মস্তিস্কে বা রোবটে ইনষ্টল করতে পারবেন।
কার হাত ধরে আসছে এই প্রযুক্তি
?
এখন আর কল্পনা বা মুভিতে নয় বরং পৃথিবীবাসী রোবোকপ বা টার্মিনেটর
মুভির বাস্তব রূপ দেখতে যাচ্ছে । মানুষ আর যন্ত্রের মাঝে ব্যবধান কমে আসছে শীঘ্রই।
মানুষের মস্তিষ্কে নানা যন্ত্রাংশ প্রতিস্থাপন করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানোর দায়িত্ব
পেয়েছে ইলন মাস্কের কোম্পানি ব্রেইন-ইমপ্লান্ট । বড় বিচিত্র এক ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে
যাচ্ছে মানব সভ্যতা।
শেষ কথা -
রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রাণীদের ওপর নিউরালিঙ্ক এর পরীক্ষা
চালানোর ফলে অনেক নিরীহ প্রাণী মারা গেছে।
এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। এমতাবস্থায় সংস্থাটিকে
অনুমতি দেওয়া হলো। তাই এর ফলাফল কি হয় তা জানার জন্য আরও অপেক্ষা ও সাবধানতা প্রয়োজন।
পোস্ট ট্যাগ -
নিউরালিংক চিপ কি , নিউরালিংক কি , মস্তিষ্কে কি চিপ লাগানো যায়
, কিভাবে মস্তিষ্ক চিপ আপনি পরিবর্তন করতে পারেন , ইলন মাস্ক নিউরালিংক কি কাজ করে
, নিউরালিংক এর চিকিৎসা কি , কয়েকটি প্রযুক্তির নাম , প্রযুক্তির ব্যবহার , প্রযুক্তি
কি , তথ্য প্রযুক্তি , প্রযুক্তির উন্নয়ন কিভাবে হয়েছে , প্রযুক্তি in English ,
প্রযুক্তির গঠন , প্রযুক্তি আমাদের জীবনকে কিভাবে প্রভাবিত করে