বিভিন্ন দাবি আদায়ে রাজনৈতিক দলগুলো হরতাল ও অবরোধের
মত কর্মসূচি দিয়ে থাকে। এসব কর্মসূচীর মাধ্যমে সরকারকে তাদের দাবী মানতে বাধ্য করার
চেষ্টা করে রাজনৈতিক দলগুলো। এতে কখনও দাবী আদায় হয় আবার কখনো আন্দোলন ব্যর্থ হয়। সরকারও
রাজনৈতিক সংকট মোকাবিলায় নানা ধরনের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক পদক্ষেপ গ্রহন করে।
বর্তমান সরকারকে পতনের লক্ষ্যে বিরোধী দলগুলো এক দফা
আন্দোলনের ঘোষণা দেয়। তারই অংশ হিসেবে গত ২৮ অক্টোবর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল - বিএনপি
তাদের পূর্ব ঘোষিত মহাসমাবেশ হঠাৎসমাপ্তি ঘোষনা করে দেশব্যাপি সর্বাত্বক হরতালের ডাক
দেয়। এরপর গত ১৫ই নভেম্বর নির্বাচন কমিশন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরিপূর্ণ তফসিল
ঘোষণা করেন। নির্বাচন কমিশন কর্তৃক তফসিল ঘোষনার পর থেকে বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন
ঠেকাতে বিএনপি-জামায়াত ও সমমনা বিরোধী দলগুলো লাগাতার হরতাল ও অবরোধ কর্মসূচি দিয়ে
আসছে। ইতিপূর্বে হরতাল ও অবরোধ কর্মসূচী আলাদাভাবে দিলেও এবার একসঙ্গে অবরোধ ও হরতাল
কর্মসূচী দিয়েছে বিএনপি। অনেকের মনেই সাধারণ একটি প্রশ্ন দেখা দেয় যে, হরতাল ও অবরোধের
মাঝে পার্থক্য কী? আজ এই আর্টিকেলের মাধ্যমে এই বিষয়টি সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারনা দেওয়ার
চেষ্টা করবো ইনশা-আল্লাহ।
হরতাল-
সরকারের বিরুদ্ধে জনগণের সম্মিলিত আন্দোলনই হচ্ছে হরতাল।
হরতাল চলাকালীন সময়ে আন্দোলনের সমর্থকেরা তাদের
সকল কর্মক্ষেত্র, দোকান-পাট, অফিস-আদালত বন্ধ রাখেন। জরুরি কাজে ব্যবহৃত পরিষেবাগুলো
সর্বদা হরতাল কর্মসূচীর আওতা মুক্ত থাকে।
হরতাল হচ্ছে একটি গুজরাটি শব্দ। যা সর্বাত্মক ধর্মঘটের
নাম। মহাত্মা গান্ধী ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে এই শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেন।
হরতালের সঙ্গে সাধারণ মানুষের সমর্থন জানানোর একটি সম্পর্ক
রয়েছে। রাজনৈতিক বা অরাজনৈতিক কোন সংগঠন হরতাল কর্মসূচী আহ্বান করলে সাধারণ জনগন রাজনৈতিক
দলের আহ্বানকৃত কর্মসূচীতে সমর্থন জানিয়ে গণপরিবহন,
দোকান-পাট, অফিস-আদালত স্বেচ্ছায় বন্ধ রাখবে।
অবরোধ-
অবরোধ হচ্ছে এমন একটি কর্মসূচী যাতে জনগনের সমর্থন থাকুক
বা না থাকুক সেই কর্মসূচি পালনে জনগণকে বাধ্য করা হয়। অবরোধ কমূসূচীতে জনগনের উদ্দেশ্যে
ঘোষনা দেওয়া হয় যে, কর্মসূচি চলাকালীন সময়ে সড়ক, নৌ ও রেলপথ সম্পূর্ণ অবরোধ করে রাখা
হবে। কোন পরিবহন চলবে না। অবরোধ কর্মসূচীতে জনগনের সাড়া দেয়া বা না দেয়ার কোন বিষয়। বরং কর্মসূচি
পালনে জনগনকে বাধ্য করা হয়ে থাকে।
শেষ কথা -
একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে দেশের স্বার্থে কোন রাজনৈতিক
বা অরাজনৈতিক দলের কোন যৌক্তিক দাবী-দাওয়ার প্রতি সমর্থন থাকাটাই স্বাভাবিক। তবে সে
দাবী আদায়ের কৌশল হতে হবে অহিংস। তাই দেশের স্বার্থে সর্বদা সরকারি দল ও বিরোধী দলগুলোকে
রাজনৈতিক কর্মসূচী পালনে জনগনের জান-মালের নিরাপত্তা ও দেশের স্বার্থকেই অগ্রাধিকার
দেওয়া উচিত বলে মনে করি।
পোস্ট ট্যাগ
-
হরতাল ও অবরোধ কি , হরতাল ও অবরোধ এর খবর , হরতাল কি
, হরতাল ও অবরোধ আপডেট , হরতাল ও অবরোধ রচনা , হরতাল ও ধর্মঘট , হরতাল , অবরোধ , ধর্মঘট
কি