দই খেতে কার না ভালোলাগে। দইয়ের কথা মাথায় আসলেই আমাদের মনে পড়ে বগুড়ার বিখ্যাত দইয়ের কথা। কিন্তু যদি এমন হতো যে, আপনি ঘরে বসেই বগুড়ার দইয়ের মত দই তৈরি করতে পারবেন! তাহলে কতই না ভালো হতো। ঘরে পাতা দই আমাদের অনেকের প্রিয় এবং এটি স্বাস্থ্য সম্মতও। দই পুষ্টিগুণে ভরপুর একটি সুস্বাদু খাবার। দইয়ে রয়েছে High Calcium , High Protein, Potassium । দইয়ের সর্বাধিক উপকারী উপাদান হচ্ছে Live Bacteria ।
প্রোবায়োটিকও বলা হয় এই অণুজীবগুলোকে। যা মানব দেহের জন্য উপকারী ‘ভালো ব্যাকটেরিয়া’ নামেও পরিচিত। এই Probiotic আমাদের শরীরকে খারাপ ব্যাকটেরিয়া থেকে রক্ষা করে। এছাড়াও এটি আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি করার পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত করে। তাই Live Bacteria সমৃদ্ধ দই-ই আমাদের জন্য স্বাস্থ্যপ্রদ।
দইয়ে পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্যালসিয়াম উপাদান থাকায় তা Osteoporosis (অস্থিক্ষয়) রোধ করে। দই Protein , Vitamin-B, Potassium ও Magnesium এর ভালো উৎস হওয়ায় তা মানব শরীরে উক্ত উপাদানের ঘাটতি জনিত রোগের প্রতিকারের ভূমিকা রাখে।
আজকাল অনেকেই বাড়িতে দই জমানোর চেষ্টা করে থাকেন। কিন্তু অনেকেই যথাযথভাবে তা জমিয়ে তুলতে পারেন না। আবার কেউ জমাতে পারেলও তা সুস্বাদু হয় না।
যেভাবে দই বীজ তৈরি করবেন -
দই তৈরি করার জন্য দইবীজ গরম দুধে মেশানো উচিত। অনেক সময় সঠিক সময়ে দইবীজ সংগ্রহ করা সম্ভব হয় না। প্রায়ই আমরা এই ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকি।
নিচের টিপসগুলো ফলো করলে নিজেই দইবীজ তৈরী করে তা দ্বারা সুস্বাদু দই তৈরি করতে পারবেন -
১. কাঁচামরিচ ব্যবহার করে -
দইবীজ ছাড়া দই জমানোর সবচেয়ে সহজ উপায় হল কাঁচামরিচ। কাঁচামরিচের সাহায্যে যেভাবে দইবীজ বানাবেন :
উপকরণসমূহ -
১. কাঁচামরিচ: ১টি
২. ফুল ক্রিম দুধ: ১/২ কাপ ( ফুটিয়ে রাখা )।
পদ্ধতিসমূহ -
ক. এ ক্ষেত্রে অবশ্যই বুটাসহ কাঁচা মরিচ ব্যবহার করতে হবে। কারণ কাঁচামরিচে থাকা উৎসেচকই দই জমাতে সাহায্য করে।
খ. এবার ফুটিয়ে রাখা ফুল ক্রীম দুধকে উষ্ণ গরম করে কাঁচের পাত্রে ঢেলে নিন। দুধের মধ্যে বুটাসহ কাঁচা মরিচ ডুবিয়ে দুধটি ভালোভাবে ঢেকে কোনো আর্দ্র স্থানে ১০ - ১২ ঘণ্টা রেখে দিতে হবে। এভাবেই দই পাতার জন্য প্রয়োজনীয় দইবীজ পাওয়া যাবে।
গ. এ পদ্ধতিতে অন্যান্য দুধেও দই পাততে পারবেন। তবে কাঁচা মরিচ শুধুমাত্র দইটিকে জমানোর জন্যই ব্যবহার করুন। ফলে পাতা দই পরিশুদ্ধ ও টক হবে।
২. লেবু ব্যবহার করে -
কাঁচামরিচের মতোই একইভাবে লেবু ব্যবহার করেও দই জমাতে পারেন।
উপকরণসমূহ -
১. ফুল ক্রিম দুধ: ১/২ কাপ ( ফুটিয়ে রাখা )।
২. চামচ লেবুর রস: ১চামচ।
পদ্ধতিসমূহ -
ক. প্রথমে অল্প আঁচে দুধ ফুটিয়ে তা উষ্ণ তাপমাত্রায় নিয়ে আসুন। তারপর এতে লেবুর রস মিশিয়ে ঢেকে রাখুন।
খ. এভাবে ১০-১২ ঘণ্টা রেখে দিলেই দইবীজ তৈরি হয়ে যাবে। তারপর তৈরিকৃত দইবীজ ব্যবহার সুস্বাদু দই বানিয়ে ফেলুন।
সুস্বাদু দই তৈরিতে ঘরে তৈরি দইবীজ ২ চা চামচের বেশি ব্যবহার করা উচিত নয়। দই ভালোভাবে জমে গেলে তা ফ্রিজে সংরক্ষণ করুন।
৩. ভিনেগারের সাহায্যে দইবীজ তৈরী -
প্রথমে মোটা তল বিশিষ্ট একটি প্যান চুলায় বসিয়ে তার ভেতরে একটি স্ট্যান্ড বসান। স্ট্যান্ডের উপর একটি তোয়ালে ভাঁজ করে রাখুন। ঢাকনা দিয়ে প্যান ঢেকে দিন। ঢাকনায় যেন কোনো ছিদ্র না থাকে। এভাবে চুলায় সর্বনিম্ন আঁচে ১০ মিনিট রেখে দিন।
বাটিতে ১/২ কাপ Full Cream গুঁড়া দুধ নিন। ভালকরে ১/৪ কাপ তরল দুধ দিয়ে মিশিয়ে নিন। এরপর তাতে ৩ টেবিল চামচ ভিনেগার অল্প অল্প করে মিশিয়ে নিন। এবার মাটি বা কাচের পাত্রে মিশ্রণটি ঢেলে দিন। ফয়েল পেপার বা সুতির কাপড় দিয়ে পাত্রটি ভালভাবে ঢেকে চুলায় রেখে দেওয়া স্ট্যান্ডে বসিয়ে তাওয়াল দিয়ে মুড়িয়ে দিন। এভাবে চুলায় সর্বনিম্ন আঁচে ১৫ মিনিট রেখে দিন। দইবীজ তৈরি হয়ে যাওয়ার পর স্বাভাবিক তাপমাত্রায় আসার পর ১ ঘণ্টার জন্য নরমাল ফ্রিজে রেখে দিন। এবার এই দইবীজ ব্যবহার করে সর্বোচ্চ ৩০ দিনের মধ্যে আপনার সুবিধাজনক সময়ে পরিবারের জন্য সুস্বাদু দই তৈরী করতে পারবেন।
যেভাবে দই তৈরি করবেন (How to make yogurt ) -
১. বাড়তি পানি ঝরানোর জন্য চালুনিতে দেড় কাপ দইবীজ রেখে দিন।
২. প্যানে ১ টেবিল চামচ চিনি দিয়ে হালকা আঁচে চিনি গলে সোনালী রং ধারণ করা পর্যন্ত নেড়ে ক্যারামেল বানিয়ে নিন।
৩. এরপর তাতে সামান্য দুধ দিয়ে নেড়ে নামিয়ে ফেলুন।
৪. এবার ২ লিটার দুধ ফুটিয়ে নিন। কমপক্ষে ৬-৭ বার বলক তুলবেন।
৫. দুধে প্রয়োজন মতো চিনি মেশান।
৬. ক্যারামেলমিশ্রিত দুধ দিয়ে আরও ২টি বলক তুলুন।
৭. দুধ নামিয়ে কুসুম গরম হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।
৮. এবার দইবীজ ভালো করে ফেটে নিয়ে তাতে অল্প অল্প করে কুসুম গরম দুধ মিশিয়ে নিন।
৯. এরপর যে পাত্রে দই বসাবেন সে পাত্রে দুধের মিশ্রণ ঢেলে নিন। চুলায় দই বসাতে দইবীজের মত করেই বসান।
১০. দুই ঘণ্টার মধ্যেই তৈরি হয়ে যাবে কাংখিত দই। ওভেনে বসাতে চাইলে ৫০ - ৮০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় সর্বোচ্চ ২ ঘণ্টা সময় লাগবে দই জমতে।
যাদের উপরের দই বানানোর প্রসেসগুলি ঝামেলাকর মনে হয়, তারা চাইলে খুব সহজেই কোন ঝামেলা ছাড়াই দইবীজ তৈরী করে বাকি উপাদানগুলি প্রসেস করে Yogurt Maker এর সাহায্যে খুব অল্প সময়েই বানিয়ে ফেলতে পারেন সুস্বাদু দই।
Yogurt Maker (দই মেকার) এই প্রোডাক্টটি Daraz সহ বিভিন্ন ই-কমার্স সাইটে পাওয়া যাচ্ছে।
পোস্ট ট্যাগ -
গরুর দুধ দিয়ে দই বানানোর রেসিপি , বগুড়ার দই বানানোর রেসিপি , ফ্রিজে দই বানানোর রেসিপি , টক দই বানানোর রেসিপি , মিষ্টি দই বানানোর রেসিপি , দই বানানোর উপকরণ , ১০ মিনিটে টক দই বানানোর নিয়ম , পাউডার দুধ দিয়ে দই বানানোর রেসিপি , দুধ থেকে দই তৈরি হয় কিভাবে? , টক দই কিভাবে তৈরি করা হয়? , বগুড়ার দই কিভাবে বানানো হয়? , দই বানাতে কতটুকু দই লাগে? , Yogurt sweet machine price , Yogurt sweet machine commercial , Homemade yogurt sweet machine , How to make yogurt step by step? , What are yoghurt processing steps? , What are the main ingredients of yogurt? , দই এর প্রধান উপাদান কি? , Is yogurt and curd the same? , How to make quality yogurt? , How to make yogurt at home? , How to make yogurt at home without starter? , How is yoghurt made from curd? , Do I have to boil milk to make yogurt? , Yogurt making process step by step , Yogurt making process pdf , how to make best yogurt at home , yogurt starter , how to make yogurt from yogurt , how to make yogurt from fresh milk , yogurt maker , easy homemade yogurt recipe