দুনিয়াতে কোন মুসলিম ভাই - বোন যদি কোন শাসক শ্রেণী, গোষ্ঠী বা কোনো ব্যক্তির দ্বারা মাজলুম অবস্থায় হত্যার শিকার হয়, তাহলে সে শহীদের মর্যাদা পাবেন।
এ প্রসঙ্গে হাদিসে এসেছে,
১. জুলুমের শিকার হয়ে কোন মুসলিম ভাই হত্যা হলে সে শহীদের মর্যাদা পাবে।
كل مسلم يقتل ظلماً فله أجر الشهيد في الآخرة ، وأما في الدنيا : فإنه يغسَّل ، ويصلَّى عليه ، ولا يُعامل معاملة قتيل المعركة .
প্রত্যেক ঐ মুসলিম যাকে যুলুম করে (মাযলুম বা অত্যাচারিত অবস্থায়) হত্যা করা হয় তাঁর জন্য পরকালে শহীদের মর্যাদা রয়েছে। আর দুনিয়াতে: তাকে গোসল দিতে হবে, তাঁর জানাযার সলাত পড়তে হবে, আর জন্য যুদ্ধের ময়দানে নিহত হওয়া ব্যক্তির মতো আচরণ করা যাবে না(যুদ্ধের ময়দানে নিহত ব্যক্তির গোসল, জানাযা দিতে হয় না, কিন্তু যুলমের শিকার এ নিহত ব্যক্তিকে দিতে হবে)
جاء في " الموسوعة الفقهية " ( 29 / 174)
সূত্র: আলমাওসূ'আতুল ফিক্বহিয়্যাহ্ (২৯/১৭৪ পৃষ্ঠা)
২. যারা হক্ব বা ন্যায়ের উপর থেকে যুলমের শিকার হয়ে নিহত হয় তাঁরা শাহাদাতের মর্যাদা লাভ করে।
أن عمر بن الخطاب رضي الله عنه طعنه أبو لؤلؤة المجوسي وهي يصلي الفجر بالمسلمين ، وعثمان بن عفان رضي الله عنه ، قتله الخارجون عليه ظلماً ، وقد وصفهما النبي صلى الله عليه وسلم بأنهما شهداء .
'উমার ইবনুল খত্ত্বাব রা: মুসলিমদের ফজরের সলাতের ইমামতি করা অবস্থায় আবূ লু'লুআহ্ আল মাজূসী ছুরির আঘাতে তাঁকে হত্যা করে। আর 'উসমান ইবনু 'আফ্ফান রাঃ কে যুলুম করে খারেজিরা হত্যা করে। অথচ তাদের উভয়কে নাবী সল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম শহীদ হিসাবে সম্মানিত করেছেন।
৩. পাহাড় চাপায় যারা মারা যাবে তারা শহীদের মর্যাদা পাবেন -
فعَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رضي الله عنه قَالَ : صَعِدَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِلَى " أُحُدٍ " وَمَعَهُ أَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ وَعُثْمَانُ فَرَجَفَ بِهِمْ ، فَضَرَبَهُ بِرِجْلِهِ ، قَالَ : (اثْبُتْ أُحُدُ ، فَمَا عَلَيْكَ إِلاَّ نَبِيٌّ ، أَوْ صِدِّيقٌ ، أَوْ شَهِيدَانِ) رواه البخاري (3483) .
আনাস ইবনু মালিক রযিয়াল্লাহু 'আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, একদা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উহুদ পাহাড়ের উপর আরোহণ করলেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন আবূ বাকার, ‘উমার ও ‘উসমান (রাঃ)। তাদেরকে নিয়ে পাহাড়টি দুলে উঠল। আল্লাহর রাসূল সল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাহাড়কে পা দিয়ে আঘাত করে বললেন, হে উহুদ, থামো। তোমার উপর একজন নাবী, একজন সিদ্দীক্ব ও দুইজন শহীদ ছাড়া অন্য কেউ নেই। (সহীহুল বুখারী ৩৬৮৬)
৪. মাজলুম অবস্থায় যেকোনো স্থানেই হত্যার শিকার হোন না কেন -
قال الشيخ محمد بن صالح العثيمين رحمه الله :
" (فالنبي) هو عليه الصلاة والسلام ، و(الصدِّيق) : أبو بكر، و(الشهيدان) : عمر ، وعثمان ، وكلاهما رضي الله عنهما قُتل شهيداً ، أما عمر : فقُتل وهو متقدم لصلاة الفجر بالمسلمين ، قُتل في المحراب ، وأما عثمان : فقُتل في بيته ، فرضي الله عنهما ، وألحقنا وصالح المسلمين بهما في دار النعيم المقيم" انتهى . شرح رياض الصالحين " (4 / 129 ، 130) .
শাইখ মুহাম্মাদ ইবনু সলেহ আল‘উসায়মীন রহিমাহুল্লাহ বলেন, নাবী হলেন মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম। আর সিদ্দীক্ব হলেন আবূ বাকার রযিয়াল্লাহু ‘আনহু। আর দুই শহীদ হলেন ‘উমার ও ‘উসমান রযিয়াল্লাহু ‘আনহুমা। তাঁরা উভয়েই শহীদ হয়েছিলেন। ‘উমার রযিয়াল্লাহু ‘আনহু মাসজিদে মুসলিমদের ফজরের সলাতের ইমামতি করা অবস্থায় মাসজিদের মিহরাবে নিহত হন। আর ‘উসমান রযিয়াল্লাহু ‘আনহু তার বাড়িতে নিহত হন। আল্লাহ তাদের উভয়ের প্রতি সন্তুষ্ট হন। আর আমাদেরকে ও সৎ মুসলিমদেরকেও তাদের সাথে জান্নাতে মিলিত করুন।
সূত্র: শরহু রিয়াযিস সলেহীন (৪/১২৯,১৩০ পৃষ্ঠা)
অনুবাদ: হাবিবুল্লাহ বিন আইয়ূব
ইমাম ও খত্বীব, সাভার বাজার জামে মাসজিদ, নামা বাজার, সাভার, ঢাকা।
পোস্ট ট্যাগ -
সবচেয়ে বিখ্যাত শহীদ কে? , শহীদের তিন প্রকার কি কি? , শহীদ কি ভালো না খারাপ? , শহীদ কত প্রকার ও কি কি? , শহীদের মর্যাদা pdf , ৫০ জন শহীদের মর্যাদা , ইসলামে ভাষা শহীদের মর্যাদা , শহীদের ছয়টি মর্যাদা , শহীদের মর্যাদা লাভের দোয়া , কারা শহীদের মর্যাদা পাবে , কুরআন হাদীসের আলোকে শহীদ কারা , শহীদের প্রকারভেদ