নতুন বছরের শুরুতে নানা পরিকল্পনা করা হয়। এতে সঞ্চয়ের হিসাবটা মাথায় রাখতে হবে। প্রত্যেকেরই ভবিষ্যত বা জরুরি প্রয়োজনের জন্য কিছু টাকা চেকে রাখা উচিত। তবে বর্তমান বাজারে টাকা সাশ্রয় তো দূরের কথা, বরং খরচের চাপে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
ফোর্বস ম্যাগাজিন সম্প্রতি খরচ কমিয়ে টাকা বাঁচানোর উপায় নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তো চলুন জেনে নিই টাকা সঞ্চয়ের উপায়-
১. ব্যয়ের ক্ষেত্রগুলি নির্ধারণ করা: অর্থ সাশ্রয়ের প্রথম ধাপ হল আপনার ব্যয় করার অভ্যাসগুলি জানা। সারা মাস জুড়ে খরচের জায়গাগুলো ভালো করে দেখুন। কোন খাতে কত টাকা খরচ করতে হবে তা নির্ধারণ করুন। এতে বাড়তি বা অতিরিক্ত অর্থ খরচ কমবে।
২. একটি বাজেট তৈরি করা: আপনি যদি অতিরিক্ত ব্যয় কমাতে চান তবে একটি সঠিক বাজেট তৈরি করা গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য মোট আয় থেকে মাসের শুরুতে বাজেট তৈরি করতে হবে। একটি সাধারণ বাজেটকে বলা হয় প্রয়োজন ও চাহিদার জন্য অর্থ আলাদা করে রাখা এবং সঞ্চয়ের জন্য মোটামুটি সমান পরিমাণ রাখা। কিন্তু শুরুতে কম সঞ্চয় করেও সঞ্চয়ের অভ্যাস করা যায়।
৩. অপ্রয়োজনীয় খরচ কাটুন: দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োজনীয় বা গুরুত্বপূর্ণ নয় এমন পণ্য বা পরিষেবার জন্য অর্থ ব্যয় করা এড়িয়ে চলুন। এমন কিছু কেনার প্রয়োজন বোধ করবেন না যা আপনি একেবারেই পেতে পারেন।
ভবিষ্যতে আর্থিক সংকটের সম্ভাবনা থাকবে। উদাহরণস্বরূপ, আপনি একটি অপ্রয়োজনীয় ব্যয়বহুল মোবাইল ফোন বা প্রায়ই ডিনারে যাওয়ার অভ্যাস বাদ দিতে পারেন। এই টাকা আপনারই থাকবে।
৪. একটি স্বয়ংক্রিয় সঞ্চয় অ্যাকাউন্ট সেট আপ করা: আপনার যদি সঞ্চয়ের লক্ষ্য থাকে তবে একটি স্বয়ংক্রিয় সঞ্চয় অ্যাকাউন্ট সেট আপ করুন। এর নিজস্ব সুবিধা রয়েছে। অনেক সময় কাজের চাপে কেউ মাসের শুরুতে সঞ্চয় বা জমা রাখতে ভুলে যায়। এই ক্ষেত্রে, যদি একটি স্বয়ংক্রিয় সেভিংস অ্যাকাউন্ট সেট আপ করা হয়, তবে এটি নিয়ে ভাবার দরকার নেই।
৫. অপ্রয়োজনীয় সাবস্ক্রিপশন বাতিল করা: নিয়মিত অনলাইন বা অফলাইনে যেকোনো সাবস্ক্রিপশন চেক করার অভ্যাস করুন। সাবস্ক্রিপশন বাতিল করুন যা গত কয়েক মাস ধরে ব্যবহার করা হয়নি এবং বর্তমানে প্রয়োজন নেই। আপনি সহজেই দেখতে পাবেন যে আপনার পকেটে একটি ভাল পরিমাণ টাকা থাকবে। যা সঞ্চয় যোগ করা যেতে পারে।
৬. ঋণ পরিশোধ করা: আপনি যদি ঋণ নিয়ে থাকেন তাহলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পরিশোধ করুন। আপনার যদি ঋণ থাকে, তাহলে সঞ্চয়ের চেয়ে সুদ বা ঋণে আপনার বেশি টাকা খরচ হবে। এর জন্য ঋণমুক্ত হওয়ার চেষ্টা করুন।
৭. অপ্রত্যাশিত আয়ের জন্য সঞ্চয়: আপনার নিয়মিত আয় থেকে নির্দিষ্ট বাজেট আপনার মৌলিক চাহিদা এবং প্রয়োজনীয়তা পূরণের জন্য যথেষ্ট রাখা উচিত। এর মধ্যে সঞ্চয় করতে পারা আপনার জন্য সুবিধাজনক বা এগিয়ে থাকার সমান।
তবে এর বাইরে যদি কোনো অপ্রত্যাশিত আয় বা অর্থ আসে, যেমন আত্মীয় বা বন্ধুদের কাছ থেকে উপহার, বাড়ি বা হোস্টেল থেকে অতিরিক্ত আয়, সেভিংস অ্যাকাউন্টে রাখুন। এতে আপনার সঞ্চয় বাড়বে।
৮. জেনেরিক ব্র্যান্ডের নির্বাচন: অনেক সময় অনেক বিখ্যাত ব্র্যান্ডের পণ্য কেনা হয়। কিন্তু একই পণ্য কাছাকাছি মুদি দোকানে প্রায় সমান মানের নন-ব্র্যান্ডে পাওয়া যায়। আপনি যাচাইয়ের মাধ্যমে এই নন-ব্র্যান্ডেড পণ্যগুলি চেষ্টা করতে পারেন। এতে অনেক কম টাকা খরচ হবে।
৯. বাসা থেকে দুপুরের খাবার নেওয়া: অনেকেই অফিস-আদালতে বা কর্মস্থলে বাইরের খাবার খান। এতে প্রতিদিন ভালো পরিমাণ টাকা খরচ হয়। আপনি যা চান তা বন্ধ করতে পারেন।
এ জন্য প্রতিদিন সকালে বাসা থেকে দুপুরের খাবার নিতে পারেন। এতে দুপুরের খাবারের টাকা পকেটে বাঁচবে।
এভাবে মাস শেষে আপনার ভালো পরিমাণ টাকা থাকবে। যা সেভিংস অ্যাকাউন্টে যোগ করা যেতে পারে।
পোস্ট ট্যাগ:
টাকা কোথায় জমাবো , টাকা জমানোর 100 উপায় , টাকা জমানোর আইডিয়া , ঘরে টাকা আসার উপায় , ব্যয় কমিয়ে কিভাবে সঞ্চয় করা যায় , ব্যবসার টাকা জমানোর উপায় , হাতে টাকা থাকে না কেন , টাকা জমানোর এক মাস পদ্ধতি , টাকা জমানোর জন্য কোন ব্যাংক ভালো , ব্যাংকে টাকা জমানোর নিয়ম , মাসে কত টাকা জমাবেন , টাকা খাটানোর উপায়